October 30, 2024, 12:24 am
হেলাল শেখঃ আগস্ট মাস বাঙ্গালি জাতির শোকের মাস, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের ছোট বড় সবাইকে হত্যা করেছে ঘাতকরা। তাই ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করেন জাতি। বিশেষ করে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ সারা বিশ্বের মানুষ প্রশংসা করেন। বাঙালির দীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলনের চুড়ান্ত লড়াইয়ের সূচনা হয়। প্রতিবছর এই দিবস জাতির জীবনে প্রেরণায় উজ্জীবিত হওয়ার নতুন বার্তা নিয়ে আসে।
৭ই মার্চ ও ২৬ মার্চ ১৯৭১ সাল মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে জাতীয় দিবসগুলো পালন করেন জাতি। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে হানাদার বাহিনী বিভীষিকাময় অবস্থার সৃষ্টি করে মেশিনগান মর্টারের গোলায়। এই দিনে প্রথম প্রহরে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা নিরস্ত্র নিরপরাধ বাঙালির বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করলে মুক্তি সংগ্রামের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন: পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিত পিলখানায় ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের নিরপরাধ লোকদের হত্যা করেছে। তখনকার সময়ে ঢাকা, চট্রগ্রামের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছিলো।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে এই দেশ স্বাধীন না হলে আমাদের কোনো স্বাধীনতা থাকতো না, বাঙ্গালি জাতি আমরা বাংলা নববর্ষ পালন করতে পারতাম না। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র’ নামে এক নতুন অধ্যায় শুরু করেন তৎকালীন পাকিস্তান বেতারের তিনজন পথপ্রদর্শক শব্দসৈনিক বেলাল মোহাম্মদ, আব্দুল্লাহ্ আল ফারুক এবং প্রয়াত আবুল কাশেম সন্দ্বীপ। ২৬ মার্চ ১৯৭১ সন্ধাবেলায় কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে ৮৭০ কিলোওয়াট ট্রান্সমিটার থেকে এই বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ ও ২৫ মার্চ ১৯৭১-এ পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণাভিত্তিক তারবার্তার আদলে স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কিত অনুষ্ঠান ২৬শে মার্চ ১৯৭১ইং সালে কালুরঘাট থেকে সম্প্রচার করেন এম এ হান্নান, সুলতানুল আলম, বেলাল মোহাম্মদ, আব্দুল্লাহ আল ফারুক, আবুল কাশেম সন্দ্বীপ, কবি আবদুস সালাম, এবং মাহমুদ হাসান। এসময় তারা বারবার বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া বার্তা পাঠ করেন। এইদিন ঢাকা সেনানিবাসের অভ্যন্তরের আদমজী কলেজ থেকে বন্দী অবস্থায় বঙ্গবন্ধুকে ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউজে নিয়ে যাওয়া হয়।
পাকহানাদার বাহিনী ঢাকায় দিনরাত কারফিঊ দিয়ে দলে দলে রাস্তায় নেমে ভবন, বস্তি, ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বাসভবনের ওপর ভারি মেশিনগান ও কামানের গোলা নিক্ষেপ করতে থাকে। এলাকার পর এলাকায় আগুন লাগিয়ে ভয়ার্ত নরনারী ও শিশুদেরকে অগ্নিদগ্ধ করে এবং গুলি করে হত্যা করে। বিদেশি সাংবাদিকদের হোটেলের কন্টিনেন্টালে আটক রাখা হয়। এরপর ঘটে যায় অনেক ঘটনা, ৯ মাস যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন, ২ লাখ মা-বোনকে নির্যাতন করা হয়। কম্পিউটার বিসিএস প্রিলিমিনারী গাইড সূত্র- ২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস বলা হয় কেন ? ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ নাম ধারণ করে। বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এর জন্যই ২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস বলা হয়। মহান স্বাধীনতার স্মৃতি কথা আমাদের সবাইকে অনেককিছু মনে করে দেয়। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় হোক জনতার।